ডায়েরি…
তিথি নন্দী
গল্পটা শুরু হয়েছিল ডায়েরির শেষ পাতা থেকেই । সেদিন কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে বেরিয়ে এসে রুমে ফিরছি। ফেরার সময় দেখি পায়ের নিচে একটি ডায়েরি পড়ে আছে। ডায়েরিটা হাতে তুলে নেওয়ার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও নিলাম নাহ্। মনের নেয়া না-নেয়ার দ্বিধা কাটিয়ে উঠে ডায়েরিটা তুলে নিয়ে রুমে চলে গেলাম।
পরের দিন ক্লাসে গেলাম,, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম কিন্তু কেউ কোনো ডায়েরির কথা বললো না। সেই দিন রাতে ডায়েরিটা খোলার আগ্রহ প্রকাশ করে, ডায়েরিটা খুললাম। প্রথম পাতায় লেখা ছিল, “তিলোত্তমা ” প্রথমে মনে করেছিলাম হয়তো কোনো মেয়ের নাম হবে। মনে করাটা তেমন ভুল ছিল না। নামটা পড়েই কেমন জানি ভালো লাগলো। ভাবলাম হয়তো পার্সোনাল ডায়েরি তাই আর খুললাম না। ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন আবার প্রতিদিনের মতো ক্লাস, বন্ধুদের সাথে আড্ডা শেষ করে রুমে ফিরলাম।
রাতে ঘুমানোর আগে চোখ পরলো ডায়েরিটার দিক। ডায়েরিটা খুলে শেষ পাতায় হাত দিলাম, ভেবেছিলাম হয়তো জীবনের কোনো মুহূর্ত লেখা থাকবে। কিন্তু না,, লেখা ছিল নব্বই দশক অার বর্তমানের বাস্তবতা।পড়তে শুরু করলাম……
অতীত হ্যাঁ অতীত সে তো এক দীর্ঘনিশ্বাসের নাম,,
অতীত জিনিস’টা এমন যে ফুরিয়েও তার রেশ থেকে যায়। বর্তমানকে সে ডাকে হাতছানি দিয়ে। পেছন ফিরে তাকালে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা ও ভালোলাগায় আচ্ছন্ন করে আমাদের নব্বই দশক । আমরা যারা বড় হয়ে উঠেছি সেই সময় তার স্মৃতি এখনো মনের মনিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে আছে।
তাই আমরা বিশ দশকে ঊনবিংশ শতাব্দীকে খুঁজে পেতে চাই।
ডায়েরির মালিককে একবার দেখার খুব আগ্রহ জন্মালো। পরের দিন ক্লাসে সবাইকে ডায়েরির কথা বললাম কিন্তু কেউ বললো না ডায়েরিটা তার। এইভাবে কয়েকদিন চলে যায় কিন্তু তিলোত্তমার কোনো খোঁজ পেলাম না । একদিন হঠাৎ করে দেখি কলেজ মাঠে একজায়গায় অনেকজন দাড়িয়ে। কাছে গিয়ে দেখি একটি মেয়ের চোখে জল,সবাই বলা বলি করছে সেই ডায়েরি নিয়ে।ডায়েরির মালিকের খোঁজ পেয়ে আমি ভীষণ খুশি।
মেয়েটি ছিলো ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। ২য় বর্ষে পড়ুয়া আমাদের সুনির্মলকে ডায়েরিটা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দারোয়ান চাচাকে দিয়েছিল, দারোয়ান চাচা ছিলো একটু বোকা ধরনের,,তিনি ডায়েরিটা হারিয়ে ফেলে। সবকিছু জানার পর পুরো ব্যাপারটা খুলে বললাম। ডায়েরিটাও ফেরত দিলাম।
ডায়েরিটা পেয়ে তিলোত্তমা তেমন খুশিও হলো না।মন খারাপ করে ঐ যে চলে গেলো
পরের দিন থেকে তার আর দেখা পেলাম না…….
লেখক : শিক্ষার্থী